এই 5টি টেকনিক আজ থেকেই আপনার শেখার পদ্ধতি বদলে দিবে!

memory and active recalling

মেমোরি শক্তিশালী করার আসল ব্যায়াম: Active Recall

শক্তিশালী ও দীর্ঘস্থায়ী মেমোরি তৈরির সবচেয়ে কার্যকরী, বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতির নাম হলো Active Recall।

ব্যাপারটা খুবই সহজ… বই বা নোটস বন্ধ করে, কোনো কিছু না দেখে, নিজে থেকে তথ্যটা মনে করার চেষ্টা করা।

ভাবুন তো, আপনার মস্তিষ্কের মেমোরি সেন্টার (Hippocampus) একটা মাংসপেশির মতো। আপনি যতবার কোনো তথ্য জোর করে মনে করার চেষ্টা করবেন, ততবার ওই মাসলটার ব্যায়াম হবে। আর ব্যায়াম করলে মাসল যেমন শক্তিশালী হয়, আপনার মেমোরিও ঠিক সেভাবেই শক্তিশালী হবে।

চলুন টেকনিকগুলো শিখে নিইঃ

১. নিজেই নিজের শিক্ষক হোন: প্রশ্ন তৈরি করুন!

পড়ার সময় বা পড়ার পর, অধ্যায়ের মূল বিষয়গুলোকে কয়েকটি প্রশ্নে পরিণত করুন। যেমন: “AI কী এবং এটা কেন Future World এ রাজত্ব করবে?

এরপর বই বন্ধ করে সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজে নিজে দেওয়ার চেষ্টা করুন।

মুখে বলুন, অথবা খাতায় লিখুন।

যেখানেই আটকাবেন, বুঝবেন ওই জায়গাটা বা টপিকটা বা চ্যাপ্টারটাতে আপনার দুর্বলতা আছে এখনো!

শুধু সেই অংশটুকু আবার দেখুন। ব্যস!

২. স্মার্ট ফ্ল্যাশকার্ড ব্যবহার করুন: Spaced Repetition System (SRS)!

আপনি যে প্রশ্নগুলো তৈরি করেছেন, সেগুলোকে flashcard-এ পরিণত করুন।

একপাশে প্রশ্ন, অন্যপাশে উত্তর।

কিন্তু শুধু ফ্ল্যাশকার্ড বানালেই হবে না।

আপনাকে ব্যবহার করতে হবে Anki-এর মতো একটি Spaced Repetition সফটওয়্যার। এই অ্যাপটি বৈজ্ঞানিকভাবে ডিজাইন করা। এটি জানে কোন তথ্যটি আপনি ভুলে যেতে পারেন এবং ঠিক তার আগেই আপনাকে সেই কার্ডটি দেখাবে।

এই পদ্ধতির কার্যকারিতা অবিশ্বাস্য রকমের ভালো!

Anki অ্যাপের লিংক: https://ankiweb.net/

৩. শুধু মাথায় নয়, কাজেও দেখান!

একাধিক Pathway ব্যবহার করুন!

শুধু মনে মনে উত্তর ভাবলে চলবে না। আপনার ব্রেইনকে বিভিন্ন দিক থেকে কাজ করান।

– মুখে বলুন: উত্তরগুলো জোরে জোরে বলুন। নিজেকে বা অন্য কাউকে বোঝানোর চেষ্টা করুন।
– হাতে লিখুন: কলম দিয়ে খাতায় লিখুন। লেখার প্রক্রিয়াটি স্মৃতিকে ভিন্নভাবে গাঁথতে সাহায্য করে।
– শেখানোর চেষ্টা করুন: আপনার কোনো বন্ধুকে বা এমনকি আপনার রুমের কোনো কাল্পনিক শ্রোতাকে বিষয়টি বোঝান।

কাউকে শেখাতে গেলেই বোঝা যায় বিষয়টি আপনি নিজে কতটা বুঝেছেন।

৪. পরীক্ষার প্রস্তুতি, পরীক্ষার আগেই যাচাই করে নিন!

Practice Test দিন।

প্রচুর practice questions সমাধান করুন।

পরীক্ষার হলের মতো পরিবেশ তৈরি করে, সময় ধরে, কোনো নোটস না দেখে পরীক্ষা দিন।

এটা শুধু আপনার মেমোরিকেই টেস্ট করবে না, বরং আপনাকে চাপের মধ্যে থেকে তথ্য মনে করার অনুশীলন করাবে।

এতে পরীক্ষার ভয়ও কেটে যাবে।

৫. The Feynman Technique ব্যবহার করুন!

নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী Richard Feynman-এর নামে এই টেকনিকটি পরিচিত। কোনো কঠিন বিষয়কে profundamente বোঝার জন্য এটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে।

কীভাবে করবেন?

একটি সাদা কাগজ নিন। কাগজের উপরে যে বিষয়টি শিখতে চান, সেটির নাম লিখুন।

এবার, কল্পনা করুন আপনি বিষয়টি এমন কাউকে বোঝাচ্ছেন যে কিছুই জানে না (যেমন, একটি শিশু)। একদম সহজ ভাষায়, কোনো জটিল শব্দ ব্যবহার না করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করুন।

কেন এটা কাজ করে?

যখনই আপনি কোনো কিছু সহজ করে বোঝাতে যাবেন, তখনই আপনার ব্রেইন মূল বিষয়টির উপর ফোকাস করতে বাধ্য হবে।

যেখানেই আপনার ব্যাখ্যা আটকে যাবে বা জটিল মনে হবে, আপনি সাথে সাথে ধরে ফেলবেন যে ওই জায়গাটাতেই আপনার জ্ঞানের ঘাটতি আছে। তখন শুধু ওই অংশটুকু আবার পড়ুন এবং আপনার ব্যাখ্যাকে আরও সহজ করুন।

আপনার নতুন Study Routine হতে পারে এরকম:

১. প্রথম ধাপ: কোনো অধ্যায় বা ভিডিও একবার দেখুন বা পড়ুন, মূল ধারণাটা নেওয়ার জন্য।

২. দ্বিতীয় ধাপ: মূল পয়েন্টগুলো থেকে কয়েকটি প্রশ্ন তৈরি করুন বা Anki-তে flashcard বানিয়ে ফেলুন।

৩. তৃতীয় ধাপ: বই/নোটস বন্ধ করে প্রশ্নগুলোর উত্তর মুখে বা লিখে দেওয়ার চেষ্টা করুন (Active Recall)।

৪. চতুর্থ ধাপ: আটকে গেলে বা কঠিন মনে হলে Feynman Technique ব্যবহার করে বিষয়টি সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করুন।

৫. পঞ্চম ধাপ: Anki-এর রিভিউ শিডিউল প্রতিদিন ফলো করুন এবং নিয়মিত মিক্সড practice test দিন।

পড়াশোনা মানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকা নয়। It’s not about studying harder, it’s about studying smarter.

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top