“লোকে কি বলবে?”—এই একটা ভয় অনেক স্বপ্নকে শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে দেয়। Criticism এভয়েড করার ১০টি টিপস!

how to avoid criticism

সমালোচনা আমাদের জীবনের একটি অংশ। আপনি যত বড় স্বপ্ন দেখবেন, যত নতুন কিছু করার চেষ্টা করবেন, তত বেশি সমালোচনার মুখোমুখি হবেন।

বুদ্ধিমানের কাজ সমালোচনাকে থামিয়ে দেওয়া নয়, বরং এর দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে নিজের পথে এগিয়ে যাওয়া।

এখানে সমালোচনাকে মোকাবেলা করার ১০টি শক্তিশালী নিয়ম দেওয়া হলো, যা আপনার জন্য একটি মানসিক বর্ম হিসেবে কাজ করবে।

নিয়ম ১: Stop Throwing Stones at Barking Dogs

পথের সব কুকুরের ডাকে যদি আপনি পাথর ছুড়তে থাকেন, তাহলে আপনি কখনোই আপনার গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন না।

একটু ভেঙে বলি: 

আমাদের সবারই সীমিত সময় এবং মানসিক শক্তি আছে। আপনি যখন প্রতিটি অপ্রয়োজনীয় সমালোচনার উত্তর দিতে যান, তখন আপনি আপনার সেই মূল্যবান শক্তি এবং সময় নষ্ট করেন। সমালোচকরা প্রায়ই একটি প্রতিক্রিয়া চায়; যখন আপনি প্রতিক্রিয়া দেখান, তখন আপনি আসলে তাদেরকেই জিতিয়ে দেন। আপনার ফোকাস হওয়া উচিত আপনার লক্ষ্যের দিকে, পথের পাশের কোলাহলের দিকে নয়।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন: 

কোনো সমালোচনার উত্তর দেওয়ার আগে নিজেকে “5/5/5 Rule” দিয়ে ফিল্টার করুন— “এই বিষয়টা কি ৫ দিন, ৫ মাস বা ৫ বছর পর আমার কাছে কোনো গুরুত্ব রাখবে?” যদি উত্তর “না” হয়, তাহলে একদমই এভয়েড করুন এবং নিজের কাজে মনোযোগ দিন।

নিয়ম ২: Protect Yourself from Unworthy Voices!

যার সমালোচনা কনস্ট্রাকটিভ নয়, তার সমালোচনা শোনা মানে নিজের সময় এবং শক্তি নষ্ট করা।

একটু ডিটেইল বলি:

সবার মতামতের ওজন সমান নয়। যে মানুষটি নিজে কখনো কোনো কিছু চেষ্টা করেনি বা যার জীবনে আপনি অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো কিছুই খুঁজে পান না, তার ফিডব্যাক আপনার জন্য কোন কাজেই আসবে না আসলে।

গঠনমূলক সমালোচনা আসে তাদের কাছ থেকে, যারা আপনার ভালো চায় এবং নিজেরাও সেই বিষয়ে অভিজ্ঞ।

ফেইসবুকে দেখবেন অনেকে উল্টা পাল্টা কমেন্ট করছে আপনার পোস্টের নিচে। যদি ওই প্রোফাইলে ঢুকেন, তাহলে আমার উপরের কথাটার সত্যতার প্রমাণ পাবেন।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

যখন কেউ আপনার সমালোচনা করবে, নিজেকে “Credibility Test” প্রশ্নটি করুন— “আমি কি এই মানুষটার জায়গায় নিজেকে দেখতে চাই? তার জীবন বা কাজ কি আমার কাছে সম্মানযোগ্য?” যদি উত্তর “না” হয়, তাহলে তার কথায় কান দিবেন না। জাস্ট ইগ্নোর!

নিয়ম ৩: Redefine Kindness!

দয়ালু হওয়া মানে সবাইকে খুশি রাখা নয়। আসল দয়া হলো, সম্মানের সাথে মানুষকে সত্যটা বলা।

আমরা প্রায়ই “nice” এবং “kind” হওয়াকে এক করে ফেলি। “Nice” হওয়া মানে হলো সংঘাত এড়ানোর জন্য সবাইকে খুশি রাখা, এমনকি যদি তা মিথ্যা দিয়েও হয়।

কিন্তু “Kind” হওয়া মানে হলো কারো ভালোর জন্য কঠিন সত্যটাও সম্মানের সাথে বলা। সাময়িক স্বস্তি হয়তো সমর্থন এনে দেয়, কিন্তু স্বচ্ছতা দীর্ঘমেয়াদী সম্মান এনে দেয়।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

পরেরবার যখন আপনার কোনো বন্ধুর প্রেজেন্টেশনে কোনো ভুল দেখবেন, তখন “সবই ভালো হয়েছে” বলার বদলে বলুন, “তোমার প্রেজেন্টেশনটা ভালো ছিল, কিন্তু এই জায়গাটা আরেকটু উন্নত করলে আরও অসাধারণ লাগবে।”

এবং ঠিক একইভাবে কেউ যখন আপনাকে এপ্রোচ করবে – তখন শুনবেন এবং অ্যাডজাস্ট করার চেষ্টা করবেন! এইটা ক্রিটিসিজম না – আপনাকে ভালো করার গাইডলাইন। আপনার পার্সোনাল কিছু না এটা – বরং আপনার কাজের জন্যে এইটা দরকার!

নিয়ম ৪: ফ্যাক্ট এবং অনুভূতিকে আলাদা করুন – Separate Facts from Feelings!

সব সমালোচনা সত্য নয়, বেশিরভাগই ছদ্মবেশে থাকা ব্যক্তিগত মতামত।

একটু ভেঙে বলিঃ

যখন কেউ আমাদের সমালোচনা করে, তখন আমাদের প্রথম প্রতিক্রিয়া হয় আবেগকেন্দ্রিক। আমরা কষ্ট পাই বা রেগে যাই। এই আবেগ আমাদের দরকারি ফিডব্যাকটুকুও দেখতে দেয় না। বুদ্ধিমানের কাজ হলো, আবেগটাকে একপাশে সরিয়ে রেখে সমালোচনার ভেতর থেকে “ডেটা” খুঁজে বের করা।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

কেউ সমালোচনা করলে তা একটি কাগজে লিখুন। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় শুধু সেই অংশটুকু আন্ডারলাইন করুন যা আপনার কাছে গঠনমূলক বা দরকারি মনে হয়েছে। বাকিটা Noise হিসেবে ফেলে দিন।

চাকরির বাজার আর আগের মতো নেই। গতানুগতিক স্কিল দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ভাবছেন, নতুন কী শিখবেন যা আপনার ইনকামের রাস্তাকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে? উত্তরটা হলো AI। আর এর জন্য আপনার কোনো টেকনিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড বা ডিগ্রি লাগবে না। শুধু আপনার স্মার্টফোন বা ল্যাপটপই যথেষ্ট। জয়েন করুন এখনি – https://aiinbangla.com/courses/ai-champions/

নিয়ম ৫: Reframe Failure as Fuel!

ব্যর্থতা কোনো লজ্জার বিষয় নয়, এটা একটা ডেটা।

বিস্তারিত বলি তাইলে আপনারা রিলেট করতে পারবেনঃ

আমরা ব্যর্থতাকে শেষ হিসেবে দেখি, কিন্তু এটা আসলে শেখার শুরু। প্রতিটি হোঁচট আপনাকে শেখায় কীভাবে পরেরবার আরও ভালোভাবে চেষ্টা করতে হবে।

যে কখনো ব্যর্থ হয়নি, সে আসলে কখনো নতুন কিছু চেষ্টাই করেনি। আপনি দেখবেন, অনলাইনে কিছু একটা করতে চাইলে পদে পদে বাধা আসে, তাই না? তারমানে – কিছু একটা স্টার্ট করতে চাইলে বাধা পাওয়া বা ব্যর্থ হওয়া সাময়িকভাবে একটা প্রসেস!

সমালোচনা প্রায়ই আপনার দুর্বল জায়গাগুলো দেখিয়ে দেয়, যা আপনার উন্নতির পরবর্তী সুযোগ।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

আপনার জীবনের একটি ব্যর্থতার কথা লিখুন এবং ভাবুন—এই ব্যর্থতাটি আপনাকে কোন নতুন স্কিল বা জ্ঞান শিখতে বাধ্য করেছিল?

আপনি অবাক হয়ে যাবেন উত্তরটা দেখে!

নিয়ম ৬: Admit Mistakes Without Shame!

ভুল স্বীকার করলে আপনি weak হয়ে যাবেন এমনটা কখনোই হয় না, বরং আপনার ট্রাস্ট বাড়ে, প্রসেসটা স্ট্রং হয়।

একটু ভেঙে বলি:

আত্মরক্ষা বা “Defensiveness” আমাদের স্বভাবজাত। কিন্তু যখন আপনি বলেন “এটা আমার দোষ না”, তখন আপনি শেখার দরজাটা বন্ধ করে দেন।

অন্যদিকে, যখন আপনি নিজের ভুলের দায়িত্ব নেন, তখন মানুষ আপনাকে আরও বেশি বিশ্বাস এবং সম্মান করে।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

“এটা আমার দোষ ছিল না”—এই কথার বদলে বলুন, “আমি বুঝতে পেরেছি কোথায় ভুল হয়েছে। পরেরবার আমি এই কাজটা আরও ভালোভাবে করবো।”

সুন্দর এপ্রোচ না?

নিয়ম ৭: Criticism is Proof You’re Trying!

যে মানুষটা কিছুই করে না, তার সমালোচনাও কেউ করে না।

আপনি যখন আপনার কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে নতুন কিছু করার চেষ্টা করবেন, তখনই মানুষ আপনাকে নিয়ে কথা বলবে। সমালোচনা হলো আপনার চেষ্টার একটা Receipt, ব্যর্থতার নয়।

এটা প্রমাণ করে যে আপনি অন্তত খেলার মাঠে নেমেছেন, দর্শকের সারিতে বসে নেই।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন এই জিনিসটা?

যখনই সমালোচিত হবেন, নিজেকে হতাশ হওয়ার বদলে এই অ্যাফারমেশনটি বলুন— “তার মানে আমি এখনো খেলার মাঠে আছি”!

খেলা হবে!

নিয়ম ৮: শান্ত থাকুন, আগুনে ঘি ঢালা যাবে না কখনোই!

আপনি প্রতিক্রিয়া দেখালে সমালোচকরা আরও বেশি উৎসাহিত হয়।

আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে কিছু কথা শেয়ার করিঃ

অনেক সময় সমালোচকরা একটি আবেগঘন রিয়েকশন চায় আপনার কাছ থেকে।

সবসময়!

আমার একটা কোর্স NShamimPRO তে আমি অ্যামাজন এফিলিয়েট নিয়ে পড়াচ্ছিলাম। সমালোচকরা বলতে আরম্ভ করলো যে আমি কিছু জানি না এই সেই।

তার ঠিক ২ মাস পরেই আমাদের ওইখানকার লাইভ প্রজেক্ট ব্লগটা মাসিক 1000 Dollar মাইলস্টোন এচিভ করলো!

আমার আর নিজে থেকে কিছু বলা লাগে নাই।

কিন্তু কিছু বললেই আমার হাজারটা কাউন্টার কমেন্ট + পোস্ট করতে হতো! সময় নষ্ট হতো শুধু শুধু কিছু ফা*উল মানুষের পিছনে!

যখন আপনি রেগে গিয়ে উত্তর দেন কোন কিছুর, তখন আপনি তাদেরকেই আপনার নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দেন।

একটি পারফেক্ট উত্তরের চেয়ে একটি শান্ত নীরবতা বা একটি স্থির লঙ টার্ম উত্তর অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

যেকোনো সমালোচনার উত্তর দেওয়ার আগে একটি গভীর শ্বাস নিন এবং দশ পর্যন্ত গুনুন। এই ছোট অভ্যাসটি আপনাকে আবেগ দিয়ে ইনস্ট্যান্ট রিএকশন দেখানো থেকে বাঁচাবে।

আমাদের আরেকটা লাইভ প্রজেক্ট চলছে – এইটা নিয়েও কাজ শুরু করতে যাচ্ছি (Resume) শিগগির – তখন বর্তমানের অনেক সমালোচনার অটো জবাব দেয়া হয়ে যাবে!

নিয়ম ৯: Absorb Criticism Like Fog!

আপনাকে সব সমালোচনার প্রতিরোধ করতে হবে না। কিছু জিনিসকে আপনার মাথার উপর দিয়ে চলে যেতে দিন।

কিছু মেটাফোর দিচ্ছিঃ

কুয়াশা যেমন সূর্যের আলোকে সরাসরি বাধা দেয় না, বরং সেটিকে নরম করে দেয়, আপনিও সেভাবে সমালোচনাকে গ্রহণ করতে পারেন।

এর মানে হলো, কথাগুলো শুনুন, কিন্তু সেগুলোকে আপনার মানসিক শান্তি বা আত্মসম্মানকে আঘাত করতে দেবেন না।

আমি তখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ি, তখন আমার এক বন্ধু ছিলো এমন। আমরা একসাথে একটা মেসেও থাকতাম। হাজারো কথা, সমালোচনাকে সে জাস্ট তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিতো – আমার এখন মনে হয়, সে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ!

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

সমালোচনার উত্তরে তর্ক করার বদলে শান্তভাবে বলুন— “আমি আপনার কথা শুনেছি, আমি এটা নিয়ে ভাববো।”

এই একটি বাক্যই বেশিরভাগ অপ্রয়োজনীয় বিতর্ক থামিয়ে দিতে পারে।

নিয়ম ১০: Build Invisible Armor Through Consistency!

আসল সুরক্ষা নীরবতা নয়, আত্মবিশ্বাস।

একটু ডিটেইল বলি:

আপনার মানসিক Armourটি বা প্রতিরোধক ওয়েপনটা রাতারাতি তৈরি হবে না।

এটি তৈরি হয় আত্মবিশ্বাস থেকে।

আর আত্মবিশ্বাস আসে নিজের কাছে করা প্রতিজ্ঞা রাখার মাধ্যমে।

আপনি যখন বাইরের কোলাহলকে উপেক্ষা করে নিজের লক্ষ্যে প্রতিদিন কাজ করে যান, তখন আপনার বর্মটি একটু একটু করে শক্তিশালী হয়।

কীভাবে প্র্যাকটিস করবেন?

এই সপ্তাহে একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য ঠিক করুন (যেমন: প্রতিদিন একটা করে ভিডিও কন্টেন্ট পাবলিশ করা)।

বাইরের কে কী বললো, তা সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে শুধু নিজের অগ্রগতির উপর ফোকাস করুন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top