ইউটিউবে চেহারা না দেখিয়েই মিলিয়ন ডলার আয়? এটা কি আসলেই সম্ভব?
অনেকেই ভাবেন ইউটিউব মানেই ক্যামেরার সামনে এসে কথা বলা, নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু পর্দার আড়ালে এমন এক জগৎ আছে, যেখানে ক্রিয়েটররা নিজেদের চেহারা না দেখিয়ে, শুধুমাত্র কনটেন্ট এবং স্মার্ট মার্কেটিং-এর জোরে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করছেন।
এদের আয়ের মূল উৎস দুটি:
১. Affiliate Marketing: অন্যের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোমোট করে প্রতি বিক্রিতে কমিশন লাভ।
২. Digital Products/Merchandise: নিজেদের তৈরি করা কোর্স, ই-বুক, বা ব্র্যান্ডেড পণ্য বিক্রি।
আজ আমি আপনাদের এমন ১০টি অবিশ্বাস্য Faceless YouTube চ্যানেলের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব, যারা এই দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করে আয়ের সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে।
চলুন, দেখে নেওয়া যাক সেই চ্যানেলগুলো, যা আপনাকে অনুপ্রেরণা দেবে নতুন করে ভাবতে।
১. BRIGHT SIDE
সাবস্ক্রাইবার: ~44.4 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~7,000+
চ্যানেলের বিষয়: লাইফ হ্যাকস, মজার ফ্যাক্টস, পাজল এবং পজিটিভ কনটেন্ট নিয়ে অত্যন্ত আকর্ষণীয় অ্যানিমেটেড ভিডিও।
BrightSide যেভাবে আয় করেঃ
– মার্চেন্ডাইজ: তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডেড মার্চেন্ডাইজের (The Bright Side of Life) বিশাল কালেকশন রয়েছে, যা তাদের আয়ের একটি বড় উৎস।
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: ভিডিওতে আলোচিত বিভিন্ন প্রোডাক্টের জন্য তারা অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে থাকে।
চ্যানেল লিংক: https://www.youtube.com/@BRIGHTSIDEOFFICIAL
২. Daily Dose Of Internet
সাবস্ক্রাইবার: ~20.5 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~1,300+
চ্যানেলের বিষয়: ইন্টারনেটের সবচেয়ে মজার, সন্তোষজনক এবং ভাইরাল ভিডিও ক্লিপের একটি কিউরেটেড কালেকশন। এখানে কোনো ক্লিকবেট নেই, শুধু সেরা কনটেন্ট।
যেভাবে আয় করেন:
– মার্চেন্ডাইজ: চ্যানেলের লোগো এবং নাম ব্যবহার করে হুডি, টি-শার্টের মতো বিভিন্ন মার্চেন্ডাইজ বিক্রি করেন, যা খুবই জনপ্রিয়।
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: স্পন্সরশিপের পাশাপাশি Channel Owners-রা মাঝে মাঝে বিভিন্ন গ্যাজেট বা টুলের অ্যাফিলিয়েট লিংকও শেয়ার করেন।
লিংক: https://www.youtube.com/@DailyDoseOfInternet
৩. The Infographics Show
সাবস্ক্রাইবার: ~15.5 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~5,000+
চ্যানেলের বিষয়: বিভিন্ন ফ্যাক্টস, হিস্ট্রি এবং তুলনামূলক বিষয় নিয়ে হাই-কোয়ালিটি অ্যানিমেটেড ভিডিও।
যেভাবে আয় করেন:
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: ভিডিওর বিষয়ের উপর নির্ভর করে বিভিন্ন প্রোডাক্ট, বই এবং গেমিং-সম্পর্কিত আইটেমের অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে।
– মার্চেন্ডাইজ: নিজেদের ব্র্যান্ডেড টি-শার্ট, মগ ইত্যাদি বিক্রি করে।
লিংক: https://www.youtube.com/@TheInfographicsShow
৪. Motiversity
সাবস্ক্রাইবার: ~4 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~1,000+
চ্যানেলের বিষয়: বিশ্বের সেরা সব মোটিভেশনাল স্পিচ এবং सिनेमैटिक মিউজিকের সমন্বয়ে তৈরি শক্তিশালী অনুপ্রেরণামূলক ভিডিও।
যেভাবে আয় করেন:
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: তাদের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ রয়েছে, যা তাদের আয়ের একটি বড় উৎস।
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: মোটিভেশনাল বই, স্পিকারদের অনলাইন কোর্স এবং বিভিন্ন ওয়েলনেস প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক থেকে তারা আয় করে।
লিংক: https://www.youtube.com/@Motiversity
৫. Alux.com
সাবস্ক্রাইবার: ~4.9 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~2,500+
চ্যানেলের বিষয়: লাক্সারি লাইফস্টাইল, ফাইনান্সিয়াল সাকসেস এবং মোটিভেশন।
যেভাবে আয় করেন:
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: তাদের প্রধান আয় আসে “Billionaire’s Brain” এর মতো হাই-টিকেট কোর্স বিক্রি করে।
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: লাক্সারি প্রোডাক্ট, বই এবং তাদের ভিডিওতে আলোচিত বিভিন্ন সার্ভিসের লিংক ব্যবহার করে।
লিংক: https://www.youtube.com/@Alux
৬. Brainy Dose
সাবস্ক্রাইবার: ~2.3 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~600+
চ্যানেলের বিষয়: সাইকোলজি, সেলফ-ইমপ্রুভমেন্ট এবং ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্টস নিয়ে অ্যানিমেটেড ভিডিও।
যেভাবে আয় করেন:
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: ভিডিওর বিষয় সম্পর্কিত বই (Amazon Associates), অডিওবুক (Audible) এবং অনলাইন থেরাপি সার্ভিসের (BetterHelp) অ্যাফিলিয়েট লিংক তাদের ডেসক্রিপশনে থাকে।
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: তাদের নিজস্ব ডিজিটাল গাইড এবং কোর্স রয়েছে।
লিংক: https://www.youtube.com/@BrainyDose
৭. Fireship
সাবস্ক্রাইবার: ~4.0 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~700+
চ্যানেলের বিষয়: ডেভেলপারদের জন্য ছোট ছোট, হাই-ইনটেনসিটি কোডিং টিউটোরিয়াল।
যেভাবে আয় করেন:
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: তাদের নিজস্ব প্রিমিয়াম কোর্স রয়েছে যা ইউটিউবের চেয়ে অনেক বিস্তারিত। এটিই তাদের আয়ের প্রধান উৎস।
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: হোস্টিং সার্ভিস, VPN এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট টুলের অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে।
লিংক: https://www.youtube.com/@Fireship
৮. Practical Psychology
সাবস্ক্রাইবার: ~2.3 মিলিয়ন
ভিডিও সংখ্যা: ~300+
চ্যানেলের বিষয়: সাইকোলজির বিভিন্ন থিওরি নিয়ে আকর্ষণীয় অ্যানিমেটেড ভিডিও।
যেভাবে আয় করেন:
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: সাইকোলজি এবং সেলফ-হেল্প বইয়ের জন্য Amazon Associates তাদের অন্যতম প্রধান আয়ের উৎস। তারা বিভিন্ন অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্মের (যেমন Skillshare) অ্যাফিলিয়েটও।
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: নিজেদের তৈরি ই-বুক এবং অডিওবুক বিক্রি করে।
লিংক: https://www.youtube.com/@PracticalPsychologyTips
৯. Power of Positivity
সাবস্ক্রাইবার: ~49k
ভিডিও সংখ্যা: ~377+
চ্যানেলের বিষয়: মোটিভেশনাল এবং অনুপ্রেরণামূলক কনটেন্ট।
যেভাবে আয় করেন:
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: পজিটিভ থিংকিং-এর উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ই-বুক, কোর্স এবং গাইড বিক্রি করে।
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: মোটিভেশনাল বই, জার্নাল এবং বিভিন্ন ওয়েলনেস প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে।
লিংক: https://www.youtube.com/@Powerofpositivity
০। The Path
২০২৫ সালে যে AI স্কিল শিখবে, ২০২৭-এ তারাই বাজারে রাজত্ব করবে। AI Champions-এ শিখুন হাতে-কলমে বাস্তব প্রজেক্টে কাজ করে।
আপনার Journey শুরু করুন: https://aiinbangla.com/courses/ai-champions/
AI শুধু একটি টুল নয়, এটি নতুন যুগের কাজের ভাষা। এই ভাষাটি সাবলীলভাবে শিখতে যোগ দিন আমাদের কমিউনিটিতে।
ভিজিট করুন: https://aiinbangla.com/courses/ai-champions/
১০. Casgains Academy
সাবস্ক্রাইবার: ~362k+
ভিডিও সংখ্যা: ~297+
চ্যানেলের বিষয়: ব্যবসা এবং ফাইন্যান্স নিয়ে কেস-স্টাডি ভিত্তিক অ্যানিমেটেড ভিডিও।
যেভাবে আয় করেন:
– অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল বই এবং অনলাইন কোর্স প্ল্যাটফর্মের (যেমন Skillshare) অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে।
– ডিজিটাল প্রোডাক্ট: তাদের নিজস্ব প্রিমিয়াম কোর্স এবং কনসালটেশন সার্ভিস রয়েছে।
সেই সাথে Google Adsense তো আছেই!
লিংক: https://www.youtube.com/@Casgains
এই চ্যানেলগুলো প্রমাণ করে যে, ইউটিউবে সফল হওয়ার জন্য আপনাকে বিখ্যাত বা ক্যামেরার সামনে স্বচ্ছন্দ হতে হবে না। আপনার যা দরকার তা হলো—একটি ভালো নিশ, কোয়ালিটি কনটেন্ট এবং একটি স্মার্ট মনিটাইজেশন স্ট্র্যাটেজি।