Life নিয়ে এখানে ১২টি নির্মম কিন্তু জরুরি সত্যি জিনিসগুলো তুলে ধরা হলো, যা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন, আপনার জীবন ততটাই সহজ এবং সুন্দর হবে!

Lesson about life

আমরা প্রায়ই ভাবি, “এখন তো বয়স কম, আরেকটু পরে সিরিয়াস হব।” কিন্তু সত্যিটা হলো, ১৮ থেকে ৫৫ বছর—এই সময়টাই আপনার বাকি জীবনটা কেমন হবে, তা ঠিক করে দেয়।

এখানে ১২টি নির্মম কিন্তু জরুরি সত্যি তুলে ধরা হলো, যা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন, আপনার জীবন ততটাই সহজ এবং সুন্দর হবে।

১. Health-ই আসল Wealth—তাড়াতাড়ি এর যত্ন নিন।

আপনার শরীরটা হলো সেই একমাত্র জায়গা যেখানে আপনাকে সারাজীবন থাকতে হবে। আমরা প্রায়ই তরুণ বয়সে রাত জাগা, বাইরের ফাস্ট ফুড খাওয়া, বা ব্যায়াম না করাকে স্বাভাবিক মনে করি।

কিন্তু এই ছোট ছোট অবহেলার প্রভাব ৩০ বছর বয়সের পর চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকে। আপনার এনার্জি লেভেল, ফোকাস এবং কাজ করার ক্ষমতা—সবকিছুই আপনার স্বাস্থ্যের উপর নির্ভরশীল।

বাস্তব উদাহরণ: পরীক্ষার আগের রাতে জেগে পুরো সিলেবাস শেষ করার চেয়ে, প্রতিদিন নিয়ম করে ২ ঘণ্টা পড়া অনেক বেশি কার্যকর এবং স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।

মনে রাখবেন, অসুস্থ শরীর আপনার স্বপ্ন পূরণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে একটা সময়।

২. সময় খুব দ্রুত চলে যায়—অন্যকে প্রমাণ করতে গিয়ে বা Show Off করতে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না।

“লোকে কী ভাববে?”—এই একটা চিন্তা আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, অর্থাৎ সময়কে চুরি করে নেয়।

আমরা প্রায়ই এমন সব কাজ করি যা দিয়ে শুধু অন্যদের Impress করা যায়, কিন্তু যা আমাদের নিজেদের কোনো কাজে আসে না। দিনশেষে আপনার সাফল্য বা ব্যর্থতার ভাগ কেউ নেবে না।

বাস্তব উদাহরণ: বন্ধুদের দেখানোর জন্য দামী ফোন বা বাইক কিস্তিতে কেনার জন্য বাড়তি চাপ নেওয়ার চেয়ে, সেই টাকা এবং সময়টা নতুন কোনো স্কিল শেখার পেছনে দিন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সুখী সুখী ছবি দেওয়ার চেয়ে, বাস্তবে সুখী হওয়ার জন্য কাজ করুন।

৩. Degree-র চেয়ে Skill আপনাকে বেশি টাকা দেবে— নতুন কিছু শেখা Continue করুন!

ভালো CGPA থাকাটা অবশ্যই ভালো, কিন্তু বাস্তব জীবনে কোম্পানিগুলো আপনার সার্টিফিকেট নয়, আপনার কাজ দেখে টাকা দেবে।

আপনি সমস্যা সমাধান করতে পারেন কিনা (Can you solve the problem?), সেটাই আসল।

পৃথিবী দ্রুত পাল্টাচ্ছে, এবং আপনার ডিগ্রির জ্ঞান হয়তো ৫ বছর পরেই পুরনো হয়ে যাবে, কিন্তু আপনার শেখার অভ্যাসটা সারাজীবন কাজে দেবে।

বাস্তব উদাহরণ: একজন কম্পিউটার সায়েন্সের গ্র্যাজুয়েটের চেয়ে একজন দক্ষ Mobile App Developer বা একজন AI এক্সপার্টের ডিমান্ড অনেক বেশি।

তাই ডিগ্রির পাশাপাশি বাস্তবসম্মত স্কিলের উপর ইনভেস্ট করুন।

চাকরির বাজার আর আগের মতো নেই। গতানুগতিক স্কিল দিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ভাবছেন, নতুন কী শিখবেন যা আপনার ইনকামের রাস্তাকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে?

উত্তরটা হলো AI।

আর এর জন্য আপনার কোনো টেকনিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড বা ডিগ্রি লাগবে না। শুধু আপনার স্মার্টফোন বা ল্যাপটপই যথেষ্ট।

জয়েন করুন এখনি – https://aiinbangla.com/courses/ai-champions/

৪. বন্ধু আসবে-যাবে—Family চিরদিনের।

স্কুল-কলেজ বা ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা হয়তো জীবনের এক পর্যায়ে চাকরি, বিয়ে বা অন্যান্য কারণে ব্যস্ত হয়ে যাবে বা দূরে চলে যাবে। এটা জীবনেরই নিয়ম।

কিন্তু আপনার সবচেয়ে খারাপ সময়ে, যখন আর কেউ থাকবে না, তখন নিঃস্বার্থভাবে আপনার পাশে আপনার পরিবারই থাকবে।

বন্ধুদের সাথে আড্ডা অবশ্যই দেবেন, কিন্তু পরিবারের জন্য কোয়ালিটি সময় বের করতে ভুলবেন না। বাবা-মায়ের সাথে তাদের দিন কেমন কাটলো তা নিয়ে কথা বলুন, তাদের খেয়াল রাখুন।

এই সম্পর্কটাই আপনার আসল শক্তি। বিপদের সময়ে বন্ধুর কথা বলি না আমরা সবসময়? নিজের পরিবারের চেয়ে বড় বন্ধু কে আছে পৃথিবীতে? কেউ নাই ভাই!

৫. যখন টাকার প্রয়োজন নেই, তখনই টাকা জমান—পরে নিজেকে থ্যাংকস দিয়েন!

টাকা জমানোর সেরা সময় হলো যখন আপনার হাতে খরচ করার মতো যথেষ্ট টাকা থাকে।

বিপদের সময় বা টাকার খুব দরকার হলে টাকা জমানো যায় না, তখন শুধু টেনশন হয়। তরুণ বয়সে জমানো অল্প টাকাই চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে ভবিষ্যতে আপনার বড় সম্পদে পরিণত হবে।

এক্সাম্পল:

টিউশনির টাকা বা হাত খরচের টাকা থেকে প্রতি মাসে অন্তত ১০% জমানোর অভ্যাস করুন।

এই ছোট জমানো টাকাটাই ভবিষ্যতে আপনার একটি ল্যাপটপ কেনা, একটি জরুরি কোর্স করা বা কোনো খারাপ সময়ে আপনার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট হয়ে দাঁড়াবে।

৬. Drama-র চেয়ে Peace-কে বেছে নিন—এটা শুধুই আপনার মানসিক + শারীরিক শক্তির অপচয়।

টক্সিক বন্ধুত্ব, অপ্রয়োজনীয় ঝগড়া, পরচর্চা বা নেগেটিভ মানুষের সাথে তর্কে জড়ানো মানে হলো নিজের মানসিক শক্তিকে ড্রেনে ফেলে দেওয়া। আপনার মানসিক শান্তি বা ‘Peace of mind’ হলো সবচেয়ে দামী অ্যাসেট।

যা কিছু আপনার শান্তি নষ্ট করে, তা থেকে দূরে থাকুন।

Real Life Example: যে বন্ধু সারাক্ষণ আপনার সমালোচনা করে বা আপনাকে ছোট করে, তার থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।

যে রাজনৈতিক বা সামাজিক তর্কে আপনার কোনো লাভ নেই, সেখান থেকে বিনয়ের সাথে সরে আসুন।

৭. আপনার প্রতিদিনের Habit-ই আপনার ভবিষ্যৎ তৈরি করবে, Motivation নয়।

মোটিভেশন হলো আগুন জ্বালানোর মতো, যা কিছুক্ষণের মধ্যেই নিভে যায়। কিন্তু অভ্যাস (Habit) হলো প্রতিদিন অল্প অল্প করে জ্বালানি যোগ করার মতো, যা আপনাকে লম্বা সময় ধরে শক্তি দেবে।

সফল মানুষরা মোটিভেশনের জন্য অপেক্ষা করেন না, তারা একটি ভালো সিস্টেম তৈরি করেন এবং প্রতিদিন সেটা ফলো করেন, সেটা মন ভালো থাকুক বা না’ই থাকুক, কাজের মোড থাকুক বা নাই থাকুন!

বাস্তব উদাহরণ: নিউ ইয়ারের প্রথম দিন জিমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটিভেশন।

কিন্তু ভালো না লাগলেও, বৃষ্টি হলেও, প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট হাঁটা বা ব্যায়াম করাটা হলো অভ্যাস।

এই অভ্যাসটাই ফলাফল এনে দেয়।

৮. The World Is Not Fair – নিজের আখের নিজেকেই গোছাতে হবে! পই পই করে 🙂 – আপনি যা চান, জাস্ট ওইটার জন্যে প্রোএক্টিভলি কাজ করুন – অন্য কারোর মুখাপেক্ষী হবেন তো ঠকবেন পদে পদে।

“আমি তো ভালো ছাত্র, আমার তো ভালো চাকরি পাওয়াই উচিত” বা “আমার আইডিয়াটা দারুণ, আমার তো সফল হওয়াই উচিত”—এই ধরনের Entitlement চিন্তাটা খুব এবং খুব’ই বিপজ্জনক।

আপনার যোগ্যতা বা ডিগ্রির জন্য পৃথিবী, দেশ কিংবা আপনার সমাজ আপনাকে কিছুই দেবে না।

আপনাকে নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে হবে।

ভালো রেজাল্ট করার পর ঘরে বসে না থেকে, ইন্টার্নশিপ করুন, নেটওয়ার্কিং করুন, নিজের একটি পোর্টফোলিও বানান এবং নিজের স্কিল দিয়ে সুযোগ তৈরি করুন।

কে কখন কি সুযোগ দিবে – ওইটার আশায় বসে থাকলে ধরা খাবেন 🙂

৯. ‘না’ বলতে শিখুন— কারণ মানুষের অনেক ধরনের সুপারপাওয়ার থাকে – এইটা একটা Superpower।

সবাইকে খুশি রাখতে গিয়ে ‘না’ বলতে না পারাটা আপনার নিজের জন্যে এবং আপনার মানসিক+ শারীরিক শক্তির সবচেয়ে বড় শত্রু।

আপনি যখন কোনো অপ্রয়োজনীয় জিনিসকে ‘না’ বলবেন, তখন আপনি আসলে আপনার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলোকে ‘হ্যাঁ’ বলার চান্স পাবেন বা পারবেন। কিন্তু ধরেন সামাজিক বা ভদ্রতার কারণে হ্যাঁ বললেন যে আপনি এইটা করে দিবেন বা যাবেন বা খাবেন বা চেষ্টা করবেন।

দেখবেন আপনার ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও এমন কিছু করতে হবে – যেটার জন্যে সারাক্ষণ একটা প্যারার মধ্যে থাকবেন।

Real Life Example:

পড়ার সময় কোনো বন্ধু যদি আড্ডা দেওয়ার জন্য ডাকে, তাকে বিনয়ের সাথে ‘না’ বলুন।

যে কাজটি আপনার লক্ষ্যের সাথে মেলে না, বা যা করতে আপনার মন সায় দেয় না, সেটিকে ‘না’ বলা শিখলেই আপনি নিজের জন্য সময় এবং সম্মান দুটোই অর্জন করতে পারবেন।

১০. Mental Health ঠিক Physical Health-এর মতোই গুরুত্বপূর্ণ।

জ্বর বা মাথাব্যথা হলে আমরা যেমন ডাক্তারের কাছে যাই বা ঔষধ খাই, তেমনি মন খারাপ, ডিপ্রেশন বা অ্যাংজাইটি হলে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেওয়াটাও স্বাভাবিক এবং জরুরি।

শারীরিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াটা যেমন স্বাভাবিক, মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াটাও ঠিক ততটাই স্বাভাবিক।

পরীক্ষার চাপ, ব্যক্তিগত সম্পর্কের সমস্যা বা ক্যারিয়ারের অনিশ্চয়তার কারণে যদি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, তাহলে যোগ্য কারো সাথে কথা বলুন বা প্রয়োজনে কাউন্সেলরের সাহায্য নিন। অন্তত নিজের কাছের বন্ধু বা পরিবারের কারো সাথে খোলাখুলিভাবে সব শেয়ার করুন।

হেল্প পান বা না পান – শেয়ার করা জরুরী। অনেক সময় শেয়ার করলেই দেখবেন সব কিছু হাল্কা হাল্কা লাগতেসে।

মনকে সুস্থ রাখাটাও সফলতার একটি অংশ।

১১. কেউই আপনাকে নিয়ে ততটা ভাবে না, যতটা আপনি ভাবেন।

একটু ভেঙে বলি:

আমরা প্রায়ই “Spotlight Effect”-এ ভুগি। আমাদের মনে হয়, সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে এবং আমাদের প্রতিটি ভুল বিচার করছে।

কিন্তু সত্যিটা হলো, মানুষ আপনাকে নিয়ে ৫ মিনিটের বেশি ভাবে না।

কার এতো সময় আছে ভাই?

সবাই নিজের জীবন এবং নিজের সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত।

আপনি কোনো প্রেজেন্টেশনে ছোট একটি ভুল করলে হয়তো দুই দিন ধরে সেটা নিয়ে ভাবেন, কিন্তু আপনার Audience-রা সেটা পরের মুহূর্তেই ভুলে যায়।

তাই স্বাধীনভাবে কাজ করুন, ভুলের ভয় পাবেন না।

১২. শেখা কখনো থামাবেন না—বয়স বাড়া মানে Evolving থেমে যাওয়া নয়।

শেখার কোনো বয়স নেই।

পৃথিবী প্রতিদিন পাল্টাচ্ছে।

আপনি যদি শেখা থামিয়ে দেন, তাহলে আপনি পিছিয়ে পড়বেন।

আপনার মস্তিষ্ক একটি মাংসপেশির মতো, যত ব্যবহার করবেন, তত শক্তিশালী হবে।

আপনার বাবা-মা যেমন এখন স্মার্টফোন বা অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহার করা শিখছেন, তেমনি আপনাকেও সবসময় নতুন টেকনোলজি, নতুন ভাষা বা নতুন স্কিল শেখার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

এই আমাকেই দেখুন না – ৩৮ বছর বয়সেও প্রতিদিন নতুন নতুন জিনিস শিখছি। 🙂

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Nasir Uddin Shamim

Nasir Uddin Shamim

Typically replies within 5-10 minutes.

I will be back soon

Nasir Uddin Shamim
Hey there 👋
It’s your friend Nasir Uddin Shamim. How can I help you?
Messenger